জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪ | অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪ - jomir khajna online
বাংলাদেশে এখন জমির খাজনা দেওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছে এবং অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা দেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু অনেকেই অনলাইনে মাধ্যমে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম জানেন না।
প্রতিটি নাগরিকের খাজনা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জমির মালিকানা অনুযায়ী অবশ্যই জমির রাজস্ব দিতে হবে। জমির খাজনা না দিলে পরবর্তীতে জমি বেদখল হয়ে গেলে এর জন্য সরকার দায়ী ভুক্ত থাকে না। জমির খাজনা যদি সঠিক নিয়মে দিতে থাকেন তাহলে পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা হলেও সেটার ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
অতীতে যে পদ্ধতিতে খাজনা নেওয়া হতো এখন আর সেই পদ্ধতিতে খাজনা নেওয়া হচ্ছে না। এখন জমির খাজনা পরিশোধ করতে হলে অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমে করা লাগবে। তাই আজকের পোস্টে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম, জমির খাজনা না দিলে কি হয়, জমির খাজনা কোথায় দিতে হয় ও জমির খাজনা দিতে কি কি কাগজ লাগে এই বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-
জমির খাজনা না দিলে কি হয়
ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়া সরকারিভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে অনেকেই আছেন যারা নির্দিষ্ট সময় পরও খাজনা পরিশোধ করেন না।তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই জেনে রাখা জরুরি যে কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট সময় পর জমির খাজনা পরিশোধ না করে থাকেন তাহলে তার উপর সার্টিফিকেট মামলা হতে পারে। তাছাড়া কোন ব্যক্তি যদি একটানা তিন বছর খাজনা পরিশোধ না করে থাকেন তাহলে তার জমিটি খাস হিসেবে গণ্য করা হবে।তখন সরকার চাইলে তার জমিটি নিলামে তুলতে পারবেন। তাই অবশ্যই নিজের গ্রামে যদি কোন জমি-জমা থেকে থাকে তাহলে নিয়মিত খাজনা দিতে হবে এবং নিজের জমির সুরক্ষা প্রদান করতে হবে। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই জমির খাজনা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
অনলাইনে খাজনা দেওয়ার উপায় - অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪
ভূমি অফিসগুলোতে অনিয়মের কারণে এখন শুধুমাত্র অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা নেওয়া হচ্ছে। ভূমি অফিসে খাজনা দিতে গেলে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে হতো ও অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হতো যার কারণে অনলাইনে খাজনা দেওয়া বেশি সুবিধা জনক অনেকে মনে করে। অনলাইনের মাধ্যমে খুবই সহজ উপায়ে এখন খাজনা দেওয়া যায়। নিচে ধাপে ধাপে দেখানো হবে কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা দিবেন:-
ধাপ ১ঃ অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা দিতে হলে প্রথমে https://ldtax.gov.bd/ এই লিংকটা ব্যবহার করে সরাসরি ভূমি উন্নয়নের ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে। ভূমি উন্নয়নের ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর এখান থেকে হোমে যেতে হবে। তারপর অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ২ঃ অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর বাটনটিতে ক্লিক করার পর আরেকটি পেজ সামনে চলে আসবে। এখান থেকে মোবাইল নাম্বার, জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ও জন্ম তারিখ উল্লেখ করে ফেলতে হবে। তারপরে এখানে আপনার আইডি কার্ডের সকল তথ্য চলে আসবে।
ধাপ ৩ঃ পরবর্তী পদক্ষেপ বাটনে ক্লিক করতে হবে এবং এখানে যে মোবাইল নাম্বারটা দেওয়া হয়েছিল সেই মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি কোড যাবে। এবার আপনাদেরকে এই স্থানে উক্ত ওটিপি কোডটি বসাতে হবে। ওটিপি কোড দেওয়া হয়ে গেলে যাচাই করণ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ৪ঃ এবার এখান থেকে পাসওয়ার্ড দিতে হবে ও পাসওয়ার্ডটি নিশ্চিত করতে হবে। তারপরে এখান থেকে সংযুক্ত করুন বাটনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করা হয়ে গেলে প্রোফাইল এবং খতিয়ান আপডেট করতে হবে। এটা করার জন্য সরাসরি প্রোফাইলে ক্লিক করতে হবে। প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করার সাথে সাথে আপনাদের সামনে আরেকটি নতুন পেজ চলে আসবে। এখান থেকে সবকিছু সঠিক তথ্য দিয়ে প্রোফাইলটা আপডেট করে ফেলতে হবে।
ধাপ ৫ঃতারপরে সরাসরি এখান থেকে খতিয়ান অপশনে চলে যেতে হবে। খতিয়ান অপশনে ক্লিক করার পরই আরেকটি পেজ চলে আসবে এবং এখানে অনেক তথ্য দেখা যাবে। এখানে আপনাদের কাজ শুধু যা যা দেখতে চাইবে সবকিছু সঠিকভাবে দিতে হবে । বিশেষ করে এখানে খতিয়ান নাম্বার, বাড়ির হোল্ডিং নাম্বার ও মৌজা অবশ্যই উল্লেখ করে ফেলতে হবে। কেউ চাইলে এখান থেকে খতিয়ান নাম্বার ডকুমেন্টসহ খুব সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
ধাপ ৬ঃ জমির খাজনা পরিশোধ করার জন্য এবার পেমেন্ট অপশনে চলে যেতে হবে। নাগরিক কর্নার থেকে পেমেন্ট অপশনে বাটনটি সিলেক্ট করতে হবে। সিলেক্ট করা হয়ে গেলে আপনাদের সামনে আরেকটি নতুন পেজ চলে আসবে। এখানে বিভাগ নির্বাচন সহ আরো কিছু তথ্য লাগবে। এখানে সকল তথ্য দেওয়া হয়ে গেলে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ৭ঃ অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করা হয়ে গেলে আপনাদের সামনে আরেকটি পেজ আসবে। এখানে মালিকের নামসহ আরো অনেক ধরনের তথ্য দেখতে পাওয়া যাবে। তাছাড়া এখানে এনআইডি কার্ড যাচাই করার আরেকটি অপশন রয়েছে এখান থেকে এনআইডি কার্ড যাচাই করে নিতে হবে। এন আইডি কার্ড যাচাই করার জন্য এনআইডি নাম্বার ও বয়স উল্লেখ করতে হবে। তারপরে আপনাদেরকে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ৮ঃএবার আপনাদেরকে আরেকটি পেজে নিয়ে আসা হবে এবং এখানে দেখতে পারবেন আপনার কতটুকু জমি রয়েছে বা কোন দাগে জমির পরিমাণ কত শতাংশ রয়েছে। যদি দীর্ঘদিন খাজনা না দিয়ে থাকেন তাহলেও এখান থেকে দেখে নিতে পারবেন। এবার এখান থেকে আপনাদেরকে অনলাইনে পেমেন্ট অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে।এবার একক মালিক সিলেক্ট করে পেমেন্ট অপশনে ক্লিক করতে হবে এবং ই-পেমেন্ট যাচাই করুন অপশনটিতে যেতে হবে। তারপরে বিকাশ নাম্বারটি দিয়ে কিছু দিক নির্দেশনা অবলম্বন করে খুব সহজেই জমির খাজনার জন্য পেমেন্ট করা যাবে।সবশেষে আপনাদেরকে একটি রশিদ দিবে এটি প্রিন্ট করে সংগ্রহ করে রাখতে হবে কেননা এটিই হচ্ছে জমির খাজনার রশিদ।
জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪ - অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪ - jomir khajna online - NeotericIT.com
জমির খাজনা দিতে কি কি কাগজ লাগে
জমির খাজনা দিতে গেলে শুধুমাত্র ভূমি অফিসারের কাছে বললেই হবে না। জমির খাজনা দেওয়ার জন্য কিছু ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়। এই সকল ডকুমেন্টগুলো অবশ্যই সাথে করে খাজনা দেওয়ার সময় নিয়ে যেতে হবে অথবা অনলাইনের মাধ্যমে দিলে সেগুলো প্রয়োজন হবে। নিচে জমির খাজনা দিতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে তা উল্লেখ করা হলো:-
- আপনার জমির সর্বশেষ খতিয়ান বা পর্চা দরকার হবে।
- খতিয়ান বা পর্চায় যার নাম থাকবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হবে।
- জমির খাজনা দিতে গেলে একটি সচল মোবাইল নাম্বার লাগবে।
অনলাইনের মাধ্যমে যদি জমির খাজনা দিতে চান তাহলে এই তিনটি ডকুমেন্ট থাকলেই হবে।
জমির খাজনা কোথায় দিতে হয়
ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসে অনেক দুর্নীতি হওয়ার কারণে এখন অনেকেই অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা পরিশোধ করছেন।তাছাড়া অনলাইনে জমির খাজনা পরিশোধ করে তারা খাজনার রশিদ ও প্রিন্ট করে নিতে পারছেন। যা অনেকটা কোন ধরনের ভোগান্তি ও ঝামেলা ছাড়াই করা সম্ভব হচ্ছে। অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা দিতে হলে https://ldtax.gov.bd/এই ওয়েবসাইটটিতে সরাসরি গিয়ে উপরের নিয়ম অনুযায়ী দিতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা
জমি থাকলে অবশ্যই খাজনা দিতে হবে এটাই সরকার প্রদত্ত নিয়ম। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী জমির খাজনা পরিশোধ করলে জমির নিরাপত্তা সরকার দিয়ে থাকে।তাই ইতিমধ্যে যারা জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে গিয়েছেন তারা উক্ত পদ্ধতিতে ঘরে বসেই জমির খাজনা দিতে পারেন। পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।